Saturday 11 July 2015

লিওর car seat

লিয়র সন্ধ্যেগুলো একদম ছকে বাঁধা । শনি আর রবিবার ব্যাতিক্রম ঘটে মাঝে মাঝে, কিন্তু বাকি পাঁচটা দিন খুবএকটা নিয়মের নড়চড় হয় না । বিকেলে ঘুম-এর পর কখনো মা-এর সাথে বাইরে বেড়িয়ে এসে, dinner খেয়ে, তেল মালিশ। ততক্ষণে বাবাও চলে আসে office থেকে । বাবার চান করানোর পরে খেলা, একটু chu chu tv, বা বাচ্চাদের কোনো animation movie. যখন চোখে ঘুম ঘুম, কথায় কথায় কোলে উঠতে ইচ্ছে করছে, তখন মুখে চুসি দিয়ে সোজা শোয়ার ঘরে । সেখানে বিছানায় আরেকটু খেলে, গরম দুধ খেতে খেতেই চোখ জুড়িয়ে আসে লিওর । বাবা (কখনও মা) তখন মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই লিও স্বপ্নরাজ্যে ।

তবে আজকের সন্ধ্যেটা একটু অন্যরকম হলো । অত সুন্দর রোদ দেখে মা লিযকে নিয়ে সামনের পার্কে বেড়াতে নিয়ে গেল । ফেরার পথে লিও দেখল বাবা হাজির ! বাড়ির সামনে গাড়ি নিয়ে বাবা হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে, এখন নাকি লিওরা আবার বেরোবে  ! বেড়াতে লিওর  খারাপ লাগে না, কিন্তু ওই car-seat-এ বসতে লিয়র মোটেও ভালো লাগে না । বাবার নতুন গাড়িতে যদিও বেশ আরাম করে যাওয়া যায়, কিন্তু পেছন দিকে মুখ করে বসতে লিয়র একদম ভালো লাগে না । বেশিক্ষণ লাগলো না, বাবার গাড়িটা কয়েকটা traffic light পেরিয়েই কয়েকটা বাঁক নিয়ে থেমে গেল । একদিক থেকে ভালই হলো, এই বার বার মাথা ঘুরিয়ে দেখতে লিয়র ভীষণ বিরক্তি লাগে । গাড়ি থামতেই বাবা এসে লিয়কে  অপছন্দের সিট থেকে তুলে নিল কোলে । অাহ্ ! লিও কোলে থাকতে বড়  ভালবাসে । কিন্তু একি, মা এসে সেই সিট-টাকে তুলে সামনের সিট-এ করে দিল । তার মানে কি লিও এইবার সামনের সিটে  বসে যাবে ? কিন্তু সেই তো উল্টো করেই বসতে হবে । কিন্তু না, আপাতত গাড়ির দরজা বন্ধ করে লিযকে নিয়ে লিও-র বাবা মা একটা দোকানে ঢুকলো । এই দোকানে লিও আগেও এসেছে । এখানে লিও-র মত বাচ্চাদের অনেক কিছু পাওয়া যায়, নাম হলো mothercare । ঢুকতেই  মা হনহন করে ভিতরের দিকে চলে গেল । বাবাও আমাকে নিয়ে  হেলতেদুলতে মা-এর পিছু পিছু চলল । দূর থেকে দেখল মা একজন  দোকানদারের সাথে কি যেন একটা জিনিস নিয়ে কথাবার্তা বলছে, কাছে গিয়েই লিও টের পেল এটা  তো আরেকটা car seat ! তবে কি লিও-রা নতুন car seat কিনতে এলো ? লিওর আশা এইটা যেন সামনের দিকে মুখ করা হয় । বেশিক্ষণ গেল না, লিওরা দোকানের বাইরে বেরিয়ে এলো, আর সঙ্গে ওই দোকানদারটা। ওনার হাতে সেই নতুন car seat! ভদ্রলোক আর বাবা মিলে সেই car seat লাগিয়ে একে অপরকে করমর্দন করে লিয়র  দিকে হাসিমুখে চাইল । লিওর চোখে মুখে তখন একটা প্রশ্নচিহ্ন। মাযের কোল থেকে নিয়ে বাবা যেই বসাতে গেছে লিযকে  নতুন car seat-এ, লিও ছিটকে বেরিয়ে যেতে চাইল, লিও আবার গাড়ির উল্টোদিকে মুখ করে বসবে না । কিন্তু বাবার শক্ত হাত থেকে বেরোনও মুশকিল । কিছুক্ষন কোস্তাকুস্তির পরে লিও বুঝতে পারল এই car seat টা তো অন্যরকম, বেশ অনেকটা লম্বা, আর সবচেয়ে বড়  কথা সামনের দিকে মুখ করা ! লিও নিশ্চিন্ত যে এইবার থেকে তাহলে সামনের দিকে মুখ করেই বসবে সে , বাকিদের মতো । আসলে বাকিদের থেকে একটু উঁচুতে, নরম গদিতে, যেটা ঘুমানোর সময় হেলিয়ে দেওয়া যায়, আবার সোজা করেও বসানো যায় । বাড়ি ফেরার পথেই নিশ্চিন্ত লিও একটু ঘুমিয়ে নিল । বাড়ি ফিরে যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন লিয়র তেল মালিশ করার সময় অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেছে ।







No comments:

Post a Comment